১০ নভেম্বর ২০০০ সাল। শীতের আভা তখন স্পষ্ট। কুয়াশাচ্ছন্ন এক সকাল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এতো রঙের ছোঁয়া লাগেনি। সাদা কালো গ্যালারিতে কানায় কানায় পূর্ণ দর্শক সাক্ষী রেখে টস করতে নামলেন নাইমুর রহমান দুর্জয় এবং সৌরভ গাঙ্গুলী। এর মধ্য দিয়ে ক্রিকেটের কুলীন পরিবারে পা রাখে বাংলাদেশ।
প্রথম টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুর্জয়। ইনিংস ওপেন করতে নামেন মেহরাব হোসেন অপি এবং শাহরিয়ার হোসেন। চারদিক থেকে ভেসে আসছে বাংলাদেশ-বাংলাদেশ রব। ভক্তদের অবশ্য হতাশ করেননি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথম ইনিংসে স্কোরবোর্ডে ৪০০ রান তোলেন তারা। দুর্দান্ত উইলোবাজিতে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
শুরুতে ভালো ব্যাট করলেও বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরে যায় ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। ভারত নিজেদের প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহের পাশাপাশি বল হাতে মাত্র ৯১ রানেই গুটিয়ে দেয় স্বাগতিকদের। সেই সুবাধে জয় পেতে কষ্ট হয়নি সফরকারীদের।সাদা পোশাকে প্রথম জয় পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ ৫ বছর ২ মাস। সংখ্যার হিসাবে ৩৫তম টেস্ট। এর আগে সর্বোচ্চ অর্জন ৩টি ড্র। এমন সমীকরণে ২০০৫ সালের ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়েকে হারায় টাইগাররা।
২০১৭ সালের মার্চে নিজেদের শততম টেস্ট খেলতে শ্রীলঙ্কা যায় বাংলাদেশ। স্মরণীয় সে ম্যাচটি জিতে স্মৃতির পাতায় চির অম্লান করে রাখে সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মুশফিকুর রহিমরা। স্বাগতিকদের হারিয়ে দেয় ৪ উইকেটে।যেখানে ক্রিকেটের উৎপত্তি, সেই শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে প্রথম ধরাশায়ী করা হয় ২০১৬ সালে। বাংলাদেশে খেলতে এসে অভিষিক্ত তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্পিনে বেকায়দায় পড়ে ইংলিশরা। তার পরের বছর নিজেদের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পায় টাইগাররা।
এর আগে পাঁচ দিনের ক্রিকেটে জয় আছে ওয়েস্ট-ইন্ডিজ কিংবা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তবে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে হারানো এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন। এই সংস্করণে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে পেয়েছে সাকিব, তামিম ইকবাল, মুশফিক, মমিনুল হক, তাইজুল ইসলাম, মিরাজদের মতো ক্রিকেটার।তবে দুঃখের বিষয় হলো- গত ২০ বছরে খেলা ১১৯ টেস্টের মধ্যে মাত্র ১৪টিতে জয় পায় লাল-সবুজরা। ১৬টি ড্রয়ের পাশাপাশি হার ৮৯ ম্যাচে।