চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রেমিটেন্স প্রবাহে ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সামনের দিনগুলোতেও রেমিটেন্স প্রবাহ ও রফতানি আয়ের ইতিবাচক এই ধারা অব্যাহত থাকবে।বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির সভাশেষে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।অর্থ
মন্ত্রণালয়ের হিসাবমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট দুই মাসে ৪৫৬ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। একক মাস হিসেবে আগস্টে রেমিটেন্স এসেছে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।অর্থমন্ত্রী বলেন, জুলাই-আগস্ট সময়ে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। রফতানি আয়ের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। আশা করি আগামী দিনেও ইতিবাচক এই ধারা চলতে থাকবে।
রেমিটেন্স প্রবাহের উচ্চ প্রবৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি রেমিটেন্স প্রবাহের বিষয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করে দেখেছেন রেমিটেন্সের বড় একটি অংশ আসে অবৈধ চ্যানেলে। তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা চাই, প্রবাসীরা যেন বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠান। এ কারণে রেমিটেন্স প্রবাহের ওপর ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা করা হয়, যার ভাল ফল এখন পাওয়া যাচ্ছে।’তিনি জানান, গত এক বছরে রেমিটেন্স পাঠানোর বিষয়ে বা প্রেরিত রেমিটেন্সের উৎস সম্পর্কে কেউ কোন প্রশ্ন তুলেনি।তিনি আরও বলেন, ‘আমি সবসময় একটি বিষয় বিশ্বাস করি, সেটা হলো আমাদের সম্পদ আছে এবং সেগুলোকে ব্যবহার করতে হবে। আমাদের অভ্যন্তরীণ সব সম্পদকে অর্থনীতির মূলধারায় আনতে হবে। কর্মোদ্যোগ অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে এবং তার বহু ধরনের সুফল পাওয়া যায়।’
রেমিট্যান্সের এ প্রবৃদ্ধিকে অবিশ্বাস্য ঘটনা বলে মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, এটা অবিশ্বাস্য ঘটনা। তিনি বলেন,‘ বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের সঙ্গে তুলনায় এবারের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ৫০ শতাংশ বেশি রেমিটেন্স এসেছে, যা অবিশ্বাস্য ঘটনা।অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আয় হয় তার পুরোটাই বৈধ পথে দেশে আসুক। আমি যখন পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলাম তখন নিজ উদ্যোগে একটা স্টাডি করেছিলাম। স্টাডিতে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ রেমিট্যান্স আসে বৈধ পথে, আর ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধ বা হুন্ডির মাধ্যমে। আমি তখন থেকেই ভাবতে আরম্ভ করলাম যে, শতভাগ রেমিট্যান্স বৈধ পথে আনতে হবে।
সেজন্য আমরা দুটি কাজ করি। একটি হচ্ছে, রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান। রেমিট্যান্স বাড়ার বিষয়ে এ প্রণোদনা কাজ করেছে। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আগে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোটা ছিল অনেক জটিল। নানাবিধ প্রশ্ন করা হতো, এখন এগুলো সহজ করে দিয়েছি। গত এক বছর যাদের রেমিট্যান্স এসেছে কাউকে প্রশ্ন করা হয়নি। কারো রেমিট্যান্স মার যায়নি। সে জন্যই এত রেমিট্যান্স রেড়েছে।মুস্তফা
কামাল আরও বলেন, প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে টাকা আয় করে আমাদের সার্পোট দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা নিজেরাও শক্তিশালী হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। কারণ, তারা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ বৈধ পথে পাঠানো শুরু করেছে। আপনারা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠান। কোন না কোনদিন এর সুফল আপনারা পাবেন।