মানবিক দিক বিবেচনায় সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের সাজা প্রাপ্ত হন খালেদা জিয়া। দীর্ঘ ২৫ মাস কারা ভোগের পর গত ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে তাকে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেয় সরকার। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই এখন সবার মনে প্রশ্ন জেগেছে আবারও কি জেলে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া, নাকি সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াবে।
তবে ইতোমধ্যে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়া খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করেছে তার পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি আবেদন পত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। আবেদনে সই করেছেন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার।
বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। ইতোপূর্বে যে ধরনের আবেদনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছিলেন এবারও তার স্থায়ী মুক্তির জন্য সেভাবে আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি দলীয় চেয়ারপারসন যেন বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন সে ব্যাপারেও সরকারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে আবেদন পত্রে। আবেদনে উন্নত চিকিৎসার জন্য কোনো শর্তারোপ না করার অনুরোধও করা হয়েছে।
গত শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে লিখিত একটি আবেদন এসেছে। সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইনি দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যের অবস্থা ও দরখাস্তে কী লেখা আছে সেসব বিষয় বিবেচনা করে দণ্ডাদেশ স্থগিতের এক্সটেনশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, সম্প্রতি তার (খালেদা জিয়া) পরিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে মুক্তির এক্সটেনশন চেয়ে আবেদন করেছেন। সেটা এখনও আমি পাইনি। পেলে দরখাস্ত দেখে বিবেচনা করা হবে।বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার যদি তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায় তাহলে তিনি সেই অনুযায়ী জেলের বাইরে থাকতে পারবেন। আর সরকার যদি তার মুক্তির মেয়াদ না বাড়ায় তাহলে ৬ মাসের সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে যে মুক্তি দেয়া হয়েছে তার মেয়াদ শেষ হবে চলতি মাসের ২৪ তারিখ। এরপরই তাকে আবার জেলে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় সাজার রায়ের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। চলতি বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে ছয় মাসের মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজাতেই রয়েছে তিনি।